শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১

শাপলায় ঘুচছে দারিদ্র্য

শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও শাপলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। খাল, বিল, পুকুর, ডোবায় জন্ম নেয়া শাপলা পূরণ করছে সবজির চাহিদা। বিল পাড়ের একদল নিবেদিত প্রাণ শাপলায় নিজেদের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি কাটাচ্ছেন নিজের সংসারের দৈন্যদশাও।

গাজীপুরের কালীগঞ্জের দুবার্টি গ্রামের ফারুক (৪৩), খলিল (৩৩), নুরুল ইসলাম (৪২) ও বেলায়েত (৪৭) টিউবওয়েল বসানোর কাজ করেন। বর্ষার ছয়মাস অন্যকোনো কাজ না থাকায় নিজেদের পেশা বদল করে বিলের শাপলা তুলে সংসার চালান। বর্ষা মৌসুমে টিউবওয়েল বসানোর কাজ প্রায় বন্ধ থাকে। তাই বলে কর্মব্যস্ত এ মানুষগুলো বসে থাকতে নারাজ। এসময় বিল থেকে শাপলা তুলে স্থানীয় বাজার ও রাজধানী ঢাকায় বিক্রি করেন।

jagonews24

শুধু তারা নয় বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবারের মানুষ এ শাপলা তোলার কাজে নিয়োজিত। এতে একদিকে যেমন নিজেদের সংসারের যাবতীয় চাহিদা মেটাচ্ছেন অন্যদিকে বিলে জন্ম নেয়া শাপলাকে সবজি হিসেবে করছেন জনপ্রিয়।

স্বাস্থ্য ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলায় ১.৩ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১.১ গ্রাম আঁশ, ৩.১ গ্রাম ক্যালোরি-প্রোটিন, ৩১.৭ গ্রাম শর্করা, ৭৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে।

সামাজিক সংগঠন কালীগঞ্জ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পুষ্টি সমৃদ্ধ শাপলা সবজি হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। যে শাপলা বিলে জন্মে বিলেই পচে যেত, সে শাপলা সবজি হিসেবে জনপ্রিয়।’

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এসএম রবীন হোসেন বলেন, ‘শাপলা তুলে স্থায়ীয় প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। বিল পাড়ের ওই মানুষগুলো ফেলনা শাপলাকে জনপ্রিয় সবজি হিসেবে এগিয়ে নিতে রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।’

jagonews24

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাস উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘শাপলায় রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। যা আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া বিলের শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিষয়টি ছোটভাবে দেখার সুযোগ নেই।’

আব্দুর রহমান আরমান/আরএইচ/জিকেএস



Advertiser