ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে লাঘাটা নদীর পানি উপচে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কড়াইয়া হাওরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে অমনের ক্ষেত। এতে ফসল হারানোর আশংকায় কৃষকরা। হাওর রক্ষা বাঁধ না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তারা।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মনু ও ধলাই নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যায়। এই দুটি নদীর পানি লাঘাটা নদীতে মিলিত হয়ে বিভিন্ন স্থান দিয়ে কড়াইয়া হাওরে প্রবেশ করে। এতে ওই ইউনিয়নের করাইয়া, হাটিকরাইয়া, মিটিপুর, আদমপুর, নোয়াগাঁও, ভোলানগর, গোবিন্দপুর, খাসপ্রেমনগর, তেঘরি, ইসলামপুরসহ ১০টি এলাকার ৩০০ একর আমন ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় স্থানীয় কৃষকরা ফসল হারানোর শংকায় রয়েছেন। দু-তিন দিনের মধ্যে পানি না নামলে কচিধানে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে এলাকায় গিয়ে একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা হয়। কড়াইয়া গ্রামের রাহাত মিয়া বলেন, এ বছর এক একর জমিতে আমন চাষ করেছি। কিন্তু মনু ও ধলাই নদীর পানি লাঘাটা নদী দিয়ে আসায় জমির ধান তলিয়ে গিয়ে আমার সর্বনাশ হয়েছে। ওই নদীতে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা গেলে কৃষকরা ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারতো।
মিটিপুর গ্রামের কৃষক মখলিছ মিয়া বলেন, আমার সাত বিঘা জমির ধানগাছ পানির নিচে আছে। দ্রুত পানি না নামলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
তেঘরি গ্রামের বর্গাচাষি সজল মালাকার বলেন, বড় আশা নিয়ে ধানের চারা লাগিয়েছিলাম। এরই মধ্যে সার প্রয়োগ করেছি। গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু ঢলের পানি সব আশা নিরাশ করে দিয়েছে।
জেলা পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে আসায় হাওর কড়াইয়াসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ থেকে পানি নামা শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ইফফাত আরা ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কড়াইয়া হাওরের কিছু জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩০০ একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না।
আব্দুল আজিজ/এসজে/জেআইএম