রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১

‘বাবা-শ্বশুরদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন জামুকার সহকারী পরিচালকরা’

‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক যারা আছেন- তাদের নিয়োগ অবৈধ। ৩২ বছর বয়সে অবৈধভাবে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালকগণ তাদের বাবা-শ্বশুরদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা তাদের নিয়োগকে বৈধ করতে চেয়েছেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অনেক রাজাকারকেও এসব অসাধু ব্যক্তিরা মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ জামুকার চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোনো প্রতিকার হয়নি।’

শনিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য ফোরাম নামে একটি সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী, যুগ্ম-আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নবী জৌলুস, সদস্য সচিব যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত দিনে যাদের মুক্তিযাদ্ধা বানানো হয়েছে এবং তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় অভিযোগের ফলে তাদের গেজেট বাতিলও হয়েছে। কিন্তু পুনরায় চূড়ান্ত তালিকায় তাদের সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বেশ কয়েকটি জায়গা বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বিশেষ করে কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের গলিতে, নিউ ইস্কাটন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এবং কাটাবন এলাকায়। এগুলো দখলমুক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কলাণে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য বহুবার আবেদন-নিবেদন করা হলেও কোনো কার্য্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এসব অনিয়ম সম্ভব হয়েছে জামুকার দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে।’

jamuka-1.jpg

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ‘ঝিনাইদহ জেলার ২৪ জন রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে, যা জাতির জনা অত্যন্ত কলঙ্কজনক অধ্যায়। দীর্ঘদিন যাবৎ আবেদন-নিবেদন করা হলেও তাদের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম অবমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় আমরা খুব শিগগিরই মহামান্য হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবো।’

তারা বলেন, ‘জামুকার অনিয়মে ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মো. সোলাইম্যানের পুত্র মো. আসাদুল ইসলাম ফাতেমীকে জামুকার ৬৬৩ম সভায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটের অনুমতি দেওয়া হয় (গেজেট নং-২০৬০)। শেখ মুজিবর রহমান নামের এক ব্যক্তির নাম জামুকা হতে যাচাই-বাছাই করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় গেজেটভুক্ত করার জন্য। মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা উক্ত নামের সঙ্গে আরও চারজনের নাম যুক্ত করে মোট পাঁচজনের নাম অবৈধভাবে গেজেটভুক্ত করে দেন।’

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে আমাদের মানসম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে জামুকার দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাজাকারমুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সর্বস্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

ইএআর/ইএ/এমএস



Advertiser