৫টা বেজে গেলেই ডুবে যাবে ২০২১ সালের শেষদিনের সূর্য। সেই ক্ষণের সঙ্গী হতে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভিড় জমিয়েছেন বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী।
বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এসেছেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আনাস মাহমুদ ও তার সঙ্গীরা। তারা জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবারের এ সূর্যটি পশ্চিমাকাশে অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদায় হবে ঘটনাবহুল ২০২১ সাল। শনিবার থেকে পথচলা শুরু হবে নতুন বছর ২০২২ সালের। এ বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আমরা বন্ধুরা মিলে বালিয়াড়িতে এসেছি।’
করোনা মহামারি আর রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে বেশ কয়েক বছর থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন নিয়ে সৈকতের বালিয়াড়ি বা উন্মোক্ত কোনো স্থানে অনুষ্ঠান হয়নি। এবারও কক্সবাজারে হচ্ছে না কোনো আয়োজন। তবে, নিয়মরক্ষায় তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইজ, সায়মন বিচ রিসোর্ট, কক্স-টু-ডে এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রামের আয়োজন করছে। হোটেলের অতিথি, বিদেশি পর্যটক এবং বিশেষ মেহমান ছাড়া এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের শরিক হওয়ার তেমন সুযোগ নেই।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিললুর রহমান বলেন, বিগত সময়ের অভিজ্ঞতায় এবারও বছরের শেষ দিনে লাখো পর্যটক উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেভাবে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বালিয়াড়ি ও সৈকতের আশপাশে টহল জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, হোটেলগুলোতে এখনও কিছু রুম খালি আছে। তবে সাপ্তাহিক ছুটি ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে অতীতের মতো পর্যটকে ভরে গেছে সৈকত।
কক্সবাজারের তারকা হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, পর্যটন বিকাশে আমরা শুরু থেকেই বাংলা নববর্ষ, থার্টি ফার্স্ট নাইটসহ নানা দিবসকে পর্যটকদের কাছে উপভোগ্য করে তুলি। পর্যটক চাহিদার কারণে এবারও বলরুমে ইনহাউজ গেস্টদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ব্যুফে ডিনারের সঙ্গে ছাদে থাকছে স্টেজ প্রোগ্রাম।
সায়মন বিচ রিসোর্টের হিসাব ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান নূর জানান, বিদেশি ও ইনহাউজ অতিথিদের জন্য ব্যুফে খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে কর্তৃপক্ষ। অন্যসময় বাইরের অতিথি ব্যুফে খেতে আসতে পারলেও থার্টি ফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান বাইরের অতিথির প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে দুরাত তিনদিনের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়ছেন তারকা হোটেল কক্সবাজার সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পারর সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) নাভিদ আহসান চৌধুরী।
আরেক তারকা হোটেল দ্য কক্স-টু-ডের ব্যবস্থাপক আবু তালেব বলেন, উল্লেখ করার মতো কোনো আয়োজন নেই। তবে, অতিথিদের জন্য লবিতে ঘরোয়া পার্টির আয়োজন থাকছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, নানা কারণে সরকার এবারও থার্টি ফার্স্ট নাইটে ওপেন অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে পর্যটকরা চাইলে গভীর রাত পর্যন্ত বিচে ঘুরতে পারবেন। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে থাকবে। কিন্তু রাত ১০টার পর হোটেলের সব বার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কোনো আতশবাজি, পটকা ফুটানো বা কোনো উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না। পাশাপাশি রাত ১২টার পর উচ্চস্বরে কোনো মাইক কিংবা সাউন্ড বাজানো নিষেধ।
সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম