সোমবার, ২ মে, ২০২২

সায়েদাবাদে আজও যাত্রীখরা, দীর্ঘ অপেক্ষায় সারি সারি বাস

ঈদযাত্রায় এবার শুরু থেকেই সড়কপথে উল্টো চিত্র। অন্য সময়ে ঈদ ঘিরে কয়েকদিন আগে যেখানে বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে হতো, এবার সেখানে সিট খালি রেখেই ছেড়ে যাচ্ছে অনেক বাস। দেড়-দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাসগুলো সিট ভরার মতো যাত্রী পাচ্ছে না। গত কদিন রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে।

ঈদের আগের দিনও রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে কাটেনি যাত্রীখরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর যাত্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে বাসগুলো।

সোমবার (২ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে সায়েদাবাদ ও এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন গন্তব্যের শত শত বাস যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীর চাপ নেই, একজন দুজন করে যাত্রী আসছেন। এতে সব সিটে যাত্রী পেতে বাসগুলোকে দেড়-দু’ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

jagonews24

সায়েদাবাদ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এটা স্বীকারও করেছেন বাসের হেলপাররা। তবে তারা বলছেন, যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে একেবারে খালি বাস নিয়ে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। এছাড়া যাত্রীও অনেক কম। কিছুটা ভাড়া বেশি না নিলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকা-কোম্পানীগঞ্জ রুটে চলাচল করা তিশা গোল্ডেন পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪৮৬৯২) চালক মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আমি গত রাত (রোববার দিনগত রাত) ১টায় ঢাকায় এসেছি। এখন পর্যন্ত আরেকটি ট্রিপ দিতে পারিনি। যাত্রী অনেক কম, আমার গাড়ি ভরতে ভরতে কমপক্ষে দুপুর ১টা বেজে যাবে। যেখানে আমরা ঈদের সময়ে কমপক্ষে চারটি ট্রিপ দেই, এখন সেখানে দুটি ট্রিপের বেশি হয় না। ট্রিপ না হলে তো আমাদের টাকা নেই, মালিকরাও কিছু পায় না।

লম্বা ছুটির কারণে এখন যাত্রী কম হচ্ছে জানিয়ে মিজান বলেন, যাত্রীরা ঈদের আগ মুহূর্তে যাওয়ার অপেক্ষায় বসে না থেকে সুবিধাজনক সময়ে আগেভাগেই চলে গেছে। পুরো টার্মিনাল ঘুরে দেখেন গাড়ি বসে আছে, যাত্রী নেই। অন্যান্য বছর ঈদের সময় যাত্রী থাকে গাড়ি থাকে না, যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়।

ঢাকা থেকে কোম্পানীগঞ্জের সরকার নির্ধারিত বাস ভাড়া ৪৭৫ টাকা হলেও এখন প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ৫৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান চালক মিজান।

কুমিল্লা যেতে তিশা পরিবহনের একটি বাসে উঠেছেন গার্মেন্টসকর্মী নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি আগেই ছুটি পেয়েছি। কিন্তু কিছু কাজ থাকায় সেগুলো সেরে আজকে বাড়ি যাচ্ছি। আমার বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। এবার পরিস্থিতি খুব ভালো, গাড়ির সংকট নেই।

ভাড়া কিছুটা বেশি নেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, অন্য সময়ে কুমিল্লার ভাড়া ২২০ টাকার মতো। কিন্তু এখন যাচ্ছি ৩০০ টাকা দিয়ে।

jagonews24

সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চলাচলকারী একুশে পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪৫১১৭) চালক মাঈনুদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, একদিনে চার সিগন্যাল (যাওয়া-আসা মিলিয়ে চার ট্রিপ) দেবো বলে গত রাতে আমি ঢাকায় এসেছি। এখন বেলা ১১টায বাজে, গাড়িতে যাত্রী মাত্র ৪-৫ জন। যাত্রী অনেক কম। ঈদের সময় যে গাড়ি ১৫ মিনিটে ভরে, এখন তা ভরতে লাগছে এক থেকে দুই ঘণ্টা। যাত্রী সংকটের কারণে ঈদে ২৪ ঘণ্টায় একটার বেশি ট্রিপ দিতে পারছি না।

রোববার দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সোমবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে।

আরএমএম/এমকেআর/জিকেএস



Advertiser