বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালন স্থগিত চেয়ে আবেদন, শুনানি ২৭ ফেব্রুয়ারি

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আপিল আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

জাপার বহিষ্কৃত নেতা এবং দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধার করা আপিল আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন জিয়াউল হক মৃধা।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মর্মে নিম্ন আদালতের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ফলে জাপা চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে বাধা নেই বলে জানান তার আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জিএম কাদেরের রিভিশন আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওইদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইনসান উদ্দিন শেখ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মামুনুর রশিদ।

শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে জিএম কাদেরের আপিল গত ১৯ জানুয়ারি নামঞ্জুর করেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় উচ্চ আদালতের রুলে। মামলার বাদী জিয়াউল হক মৃধাকে আট সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে জাপা চেয়ারম্যানের আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন ঢাকার জেলা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। ওই আদেশের ফলে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন জিএম কাদের।

এর আগে গত বছরের ৪ অক্টোবর দলে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা।

এরপর জিএম কাদের যেন জাপার বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন সে বিষয়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর (২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে) অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। পরে এ আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে জিএম কাদেরের করা আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত।

এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। পরে শুনানির আদেশ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করলে ২৪ নভেম্বর জেলা জজ আদালত সেটিও খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করেন জিএম কাদের। পরে ২৯ নভেম্বর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩০ অক্টোবরের নিষেধাজ্ঞার আদেশ ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন।

এরপর জিয়াউল হক মৃধা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বারজজ আদালত। একই সঙ্গে আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় এটি আপিল বিভাগে শুনানি হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই মারা যান। এরপর হাইকোর্টে একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন জিএম কাদের।

এরপর গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। মসিউর রহমান রাঙ্গাকেও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দল থেকে বহিষ্কার হন জিয়াউল হক মৃধাও।

এফএইচ/এসএইচএস/জিকেএস



Advertiser