বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বইমেলায় নাহিদ আহমেদ সুমিকোর ‘দাদন’

মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতিমনা নাহিদ আহমেদ সুমিকো একজন লেখক, চিত্রকর, সমাজসেবী ও সংগঠক। বইমেলা ২০২৩ এ অনুভব প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে তার প্রথম উপন্যাস ‘দাদন’। সুমিকো উপন্যাস লেখার পাশাপাশি চলচ্চিত্রের জন্য চিত্রনাট্য ও লিখেছেন।

তিনি বর্তমানে মালয়শিয়ায় বিভিন্ন সমাজসেবী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত এবং ইন্দো-মালয়েশিয়া কালচারাল ফোরামের একজন সদস্য। সাংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের জন্য তিনি ইন্দো-মালয়শিয়া ফিল্ম ও কালচারাল ফোরাম থেকে ‘স্ট্র্যাটেজিক লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।

চিত্রকর হিসেবেও তার আছে অনেক পরিচিতি। মালয়েশিয়ায় তার একক চিত্র প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এছাড়াও তিনি নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিবাহিত নারী ও সিঙ্গেল মায়েদের নিয়ে রিয়েলিটি শো আয়োজন করেন।

দাদন উপন্যাসটি নীল চাষকে কেন্দ্র করে লেখা হয়। আঠার শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ কোম্পানি কাপড়ের নীল রঙের জন্য দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল হতে থাকে। সে সময় ফরাসি নীলকর ‘লুই বোনো’ ভারতবর্ষের বাংলায় নীল চাষ প্রবর্তন করেন।

প্রাথমিকভাবে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের তত্ত্বাবধানে নীল চাষ শুরু হলেও ১৭৮৮ সালে ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি, নদীয়া আর বর্তমানে বাংলাদেশের যশোর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও উত্তরবঙ্গের অনেক অঞ্চলে নীল চাষের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। সূচনা হয় বাংলায় নীল চাষের এক অন্ধকার অধ্যায়।

ইংরেজদের অর্থনৈতিক আগ্রাসন ও ক্লেশময় সামাজিক সংগ্রামে আমাদের দুই বাংলা-উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গ সমানভাবে নির্যাতিত হয়। ওপার বাংলা ভারতের বহু গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, উপন্যাসে এমনকি ইউটিউবের মাধ্যমেও বহু লেখা পড়েছি, জেনেছি। অস্বীকার করার দুঃসাহস নেই-এর মাঝের কিছু লেখা থেকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি এ লেখাটি লিখতে।

যেমন- দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইছামতি’, মীর মশাররফ হোসনের ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’ উল্লেখযোগ্য। অথচ ভীষণভাবে আহত হয়েছি যখন দেখি, এপার বাংলায় আমাদের দেশ বাংলাদেশের খুব সামান্য লেখায়, নাটক-সিনেমায় এর প্রতিচ্ছবি।

সাংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের জন্য নাহিদ আহমেদ সুমিকোর ইন্দো-মালয়শিয়া ফিল্ম ও কালচারাল ফোরাম থেকে ‘স্ট্র্যাটেজিক লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড লাভ

সাংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের জন্য নাহিদ আহমেদ সুমিকোর ইন্দো-মালয়শিয়া ফিল্ম ও কালচারাল ফোরাম থেকে ‘স্ট্র্যাটেজিক লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড লাভ

বাংলার নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, নিপীড়িত মানুষ যারা বিপ্লবী গ্রামীণ হিন্দু-মুসলমান, কৃষকদের একত্র করে বৃহৎ আন্দোলনের আকার দিতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিতে পর্যন্ত পিছপা হননি; তাদের জন্য ভেতর থেকে একটা দায়বদ্ধতা অনুভবের ফলপ্রসূ হিসেবে আমার এই লেখা। যদিও আমার এই লেখা ইতিহাস নির্ভর, সময় স্থান কাল সঠিক রেখে গল্পকে অলংকৃত করার অভিপ্রায়ে কিছু কিছু মনগড়া গল্প সাজিয়েছি।

যদিও টুকরো-টুকরো গল্পগুলোকে তৎকালীন প্রেক্ষাপটের গন্ডির মাঝে বন্দী করেই সাজানো হয়েছে। কিছু কিছু কাল্পনিক চরিত্রের ভিড়ে পাঠকেরা খুঁজে পাবেন আদর্শবান মহান বেশকিছু ব্যক্তিত্বকেও, যেমন: লেফটেন্যান্ট গভর্নর জন পিটার গ্রান্ট, রেভারেন্ড জেমস লং, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বিশ্বনাথ সর্দার, কালীপ্রসন্ন সিংহ, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মনিরামপুরের কাদের মোল্লা, নড়াইলের নানাসাহেব রামগোপাল ঘোষ, ক্লাইমেট হেনরি, কার সাহেব, ময়ের সাহেব প্রভূত।

এমআরএম/জেআইএম



Advertiser