অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র, পরের ম্যাচে বার্সেলোনার কাছে ১-০ গোলে হার এবং সর্বশেষ রিয়াল বেটিসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র। দুঃস্বপ্নের একটি সপ্তাহ কাটিয়ে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই দুঃস্বপ্ন অবশেষে কেটেছে শনিবার রাতে ঘরের মাঠে এস্পানিওলের বিপক্ষে পাওয়া ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয়ের কারণে।
কিন্তু সে সঙ্গে শুরু হলো আরও একটি কঠিন সপ্তাহ। কারণ, এই সপ্তাহেই নির্ধারণ হবে রিয়ালের অন্তত দুটি শিরোপার ভাগ্য। একটি কোপা ডেল রে এবং অন্যটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
কোপা ডেল রে’র সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠেই বার্সার কাছে ১-০ গোলে হেরেছে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে লিভারপুলকে ৫-২ গোলে হারিয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে লজ ব্লাঙ্কোজরা। ১৬ মার্চ ফিরতি লেগে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। এরপর ২০ মার্চ লা লিগায় ন্যু ক্যাম্পে গিয়ে বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা।
এস্পানিওলের বিপক্ষে জয়ের ফলে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান একটু কমিয়েছে রিয়াল। ২৫ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট এখন ৫৬। ২৪ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে বার্সেলোনা। আজ রাতেই বিলবাওয়ের মুখোমুখি হচ্ছে বার্সা। ১৩তম স্থানে রয়েছে এস্পানিওল।
ম্যাচের পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ‘আমাদের এই তিন পয়েন্ট খুব প্রয়োজন ছিল। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সপ্তাহের শুরু। কারণ সামনের এই সপ্তাহেই আমাদের সামনে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ এবং এল ক্ল্যাসিকো।’
১৩তম স্থানে থাকা এস্পানিওল শুরুতেই স্তব্দ করে দেয় রিয়াল সমর্থকদের। ম্যাচের মাত্র ৮ম মিনিটেই গোল করে বসে দলটির ফুটবলার হোসেলু। রুবেন সানচেজের ক্রস থেকে বল পেয়েই রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টের উপরের কর্নার দিয়ে রিয়ালের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
গোল হজম করার পরই যেন আহত বাঘের মত গর্জে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। ডাগ আউট থেকে কোচ কার্লো আনচেলত্তিও উচ্চকণ্ঠে দিক নির্দেশনা দিতে থাকেন তার দলের ফুটবলারদেরকে। যার ফলশ্রুতিতে ২২তম মিনিটেই রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
এর আগেই এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গা দুর্দান্ত একটি শট নেন এস্পানিওলের জাল লক্ষ্য করে। কিন্তু সেটা ফিরে আসে গোলরক্ষকের কাছ থেকে। এরপরই বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় অন্তত দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এস্পানিওলের জালে বল জড়ান ভিনিসিয়ুস।
এ নিয়ে রিয়ালের হয়ে এই মৌসুমে ১৯তম গোল করলেন এই ব্রাজিলিয়ান। চলতি মৌসুমে করিম বেনজেমার চেয়েও বেশি গোল এখন তার। এস্পানিওল চেষ্টা চালাতে থাকে আবারও লিড নেয়ার। কিন্তু এর মাঝেই আবারও গোল করে বসেন রিয়ালের আরেক ব্রাজিলিয়ান এডার মিলিতাও।
৩৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ একটি ক্রস নেন অরেলিয়েন চুয়ামেনি। যেখান থেকে এক বুলেট গতির হেডে এস্পানিওলের জালে বল জড়ান এডার মিলিতাও।
দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ অব্যাহত রাখে রিয়াল মাদ্রিদ। ৭৫ মিনিটে প্রায় গোল করে বসেছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। আরেক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোর ফ্রি-কিক পোস্টে লেগে ফিরে না এলে তখনই ব্যবধান ৩-১ হয়ে যেতো।
খেলা প্রায় শেষ হতে যাচ্ছিলো। তখন খেলা চলছিল ইনজুরি সময়ের। ৯০+৩ মিনিটে হঠাৎ গোল করে বসেন মার্কো আসেনসিও। সে সঙ্গে ৩-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল।
আইএইচএস/