শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১

প্যারালিম্পিকে ইতিহাস গড়লেন এল সালভাদরের হার্বার্ট

শুক্রবার প্যারালিম্পিকে ইতিহাস গড়লেন এল সালভাদরের ভারোত্তলক হার্বার্ট অ্যাকেইতুনো। প্যারা অলিম্পিকে নিজ দেশকে প্রথম পদক এনে দিয়ে ভারোত্তলনের ৫৯ কেজি শ্রেণিতে ব্রোঞ্জ মেডেল জিতেছেন অ্যাকেইতুনো।

এই পদক জেতার মাধ্যমে মধ্য আমেরিকার অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ হলেন তিনি। এই ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন চীনের কুই ইয়ংকাই এবং রৌপ্য জিতেছেন মিসরের শেরিফ ওসমান।

২০১৬ সালে রিও প্যারালিম্পিকে এল সালভাদরের প্রথম ভারোত্তলক হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন হার্বার্ট। পরে ২০১৯ সালে লিমায় হওয়া প্যারাপ্যান আমেরিকান গেমসে স্বর্ণপদক জেতার মাধ্যমে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেন তিনি। আর এবার প্যারালিম্পিকে ইতিহাস গড়লেন এল সালভাদরের হয়ে।

কিন্তু এ যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিল না হার্বার্টের জন্য। তিনি বলেছেন, ‘আমি স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর অনেকেই আমাকে নিয়ে মজা করতো। তবে এটা আমাকে খুব একটা ভাবাতো না। কারণ আমার বাবা-মা আমাকে বুঝিয়েছিলেন, জীবনে আসলে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

jagonews24

তবু সবার সঙ্গে মিশতে না পারার একটা যন্ত্রণা ঠিকই ছিল না হার্বার্টের, ‘আমি এটা অস্বীকার করব না, সেই সময়টা আমার জীবনের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ আপনি সবার সঙ্গে মিশতে চান, খেলতে চান। কিন্তু বৈষম্যের কারণে আমি শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেই। আমি হাই স্কুলে ভর্তি হই, সেখানেও একই জিনিস হয়। তবে এক বন্ধু আমাকে বলে, চলো জিমে যাই। সে সবসময় আমাকে উৎসাহ দিতো। তাই আমি সেখানে যাই।’

আকন্ড্রোপ্লাজিয়া নিয়ে জন্ম নেয়ায় শিশু বয়স থেকেই উচ্চতা তেমন বাড়েনি হার্বার্টের। এরপর এর সঙ্গে যুক্ত হয় হাইড্রোসেফালুস। চিকিৎসকরা একসময় বলে দিয়েছিলেন, মাত্র তিন মাস পর্যন্ত বাঁচবেন হার্বার্ট। কিন্তু সেটি ছিল তাদের ভুল ধারণা। যে কারণে শৈশবে অনেক বিপত্তির মুখেই পড়তে হয়েছিল হার্বার্টকে।

তবে ২০ বছর বয়সে খেলাধুলায় নাম লিখিয়ে নতুন শুরু পান হার্বার্ট, ‘খেলাধুলা সবসময়ই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা আপনার সামনে অনেক দরজা খুলে দেয়। কখনও হয়তো আপনি ভাবতে পারেন খেলাধুলা দিয়ে কিছু হবে না। কিন্তু এটা বন্ধুত্বের রাস্তাও দেখিয়ে দেয়। আমি খেলাধুলার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হই।’

হার্বাটের জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন তার বাবা। কিন্তু চলতি প্যারালিম্পিকে অংশ নেয়ার কিছুদিন আগেই বাবাকে হারান তিনি। তবে প্যারালিম্পিকের টিকিট পাওয়ার খবর জানতে পেরেছিলেন হার্বার্টের বাবা। যা দেখে একইসঙ্গে খুশি ও মন খারাপ হয়েছিল তার বাবা-মায়ের।

কেননা এ রাগে কখনও হার্বার্টকে এত দূরে যেতে দেননি বাবা-মা। সেই তিনিই এবার আরেক দেশে গিয়ে ইতিহাস গড়লেন ভারোত্তলনে, দেশকে জেতালেন পদক। বাবার দেয়া একটি চাবির চেইন সবসময় সঙ্গে রাখেন হার্বার্ট। যা তাকে স্বপ্ন পূরণে অনুপ্রেরণা দেয়।

এসএএস/জিকেএস



Advertiser