কনস্যুলার সেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শওগাত আলী সাগর লাইভের আলোচনায় অংশ নিয়ে টরেন্টোতে অবস্থিত কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশের প্রধান নাইমউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের প্রয়োজনে অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা প্রাপ্তিকে সহজীকরণ করার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, অনেক বড় আয়তনের দেশ কানাডায় শুধুমাত্র অটোয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সেবা প্রাপ্তি বাংলাদেশি জন্য কষ্টকর হচ্ছে বিধায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৮ সালের জুন মাসে টরেন্টোতে ১৫টি সেবা নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কনস্যুলেট স্থাপন করা হয়।
কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব ও ডিজি পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত ভাগ্যবান কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই বাংলাদেশিদের একদিকে যেমন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মানের দৃষ্টিতে দেখেন, অন্যদিকে তাদের চাহিদা পূরণেও কখনো কালবিলম্ব করেন না।
গত প্রায় তিন বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে নাইম আহমেদ বলেন, শুরুতে নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঢাকার সঙ্গে কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কানাডার টরেন্টো শহরে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এখন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আধুনিক ডিজিটালাইজড প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে সর্বোচ্চ তিন থেকে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে যে কোনো কন্স্যুলার সেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, আগামী নভেম্বরের মধ্যেই, কন্স্যুলেট জেনারেল অফিসের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হচ্ছে, যেটি কনস্যুলার সেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে। প্রতিটি সেবাকে কিভাবে সহজে ও দ্রুততম সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তারও বিস্তারিত ব্যাখ্যা তিনি তুলে ধরেন।
সম্প্রতি নো ভিসা রিকয়ার্ড (এনভিআর) প্রাপ্তিতে কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ আর নানারকম অসন্তোষের প্রেক্ষিতে এনভিআর সংক্রান্ত নীতিমালা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অত্যন্ত স্পষ্ট করে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এনভিআর প্রাপ্তি অত্যন্ত সহজ, এটি মোটেও কোনো জটিল বিষয় নয়। কনস্যুলেটের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে স্পষ্ট নিয়মাবলী দেওয়া আছে, তার পাশাপাশি যে কেউ গুগল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাও দেখে নিতে পারেন।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয়তা প্রমাণে জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট, ইউনিয়ন পরিষদ/মিউনিসিপালিটি থেকে জাতীয়তা সনদ, বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সনদের যেকোনো একটি আবেদনের সঙ্গে সংযোজন করলেই তিনি এনভিআর প্রাপ্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হন। পাশাপাশি প্রবাসে জন্ম ও বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশিদের এনভিআর প্রাপ্তির নিয়মাবলীও তিনি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী পরিচালিত বৈদেশিক মিশন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত বিধিবিধান ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী প্রতিটি মিশন পরিচালিত হয়, নিজ ইচ্ছায় বিধি-বিধান পরিবর্তন বা সেবাগ্রহীতাদের উপর কোনো নিয়ম-কানুন চাপিয়ে দেওয়ার ন্যুনতম কোনো সুযোগ সেখানে নেই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল এবং তাদের অধিকারের বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। আমরা সবাই দেশপ্রেমে উদবুদ্ধ হয়ে, ভালোবাসা ও সম্মান দিয়ে যেকোনো সংকটকেই কাটিয়ে উঠতে পারি।
এমআরএম/এএসএম