বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি: দুই অন্তঃসত্ত্বাকে মাকে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। এ সময় তাকে সহায়তা করেন চৌগাছা মডেল হাসপাতালের প্রধান কর্মর্কতা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা, লুৎফুন্নাহার লাকি। এই তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন জানান, চৌগাছা হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগ কমাতে তিনি নিজেই নেমে পড়েন সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার কার্যক্রমে। এতে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।
চৌগাছা মডেল হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সেখানকার গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট (চ.দ) ডা. হাবীবা সিদ্দিকা ফোয়ারা ১৪ মার্চ পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। এরই মধ্যে ১১ মার্চ রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন দুইজন অন্তঃসত্ত্বা রোগী। তারা হলেন যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের শাহানারা বেগম (২০) ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বৈঁচিতলা গ্রামের সুমাইয়া আক্তার (১৯)।
পরের দিন (১২ মার্চ) সকালে গাইনী ওয়ার্ডে দায়িত্বরতরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখে নিশ্চিত হন তাদের গর্ভে পানি কমে এসেছে। জরুরি ভাবে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার দরকার। ওই দিনই হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শনে যান সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। গাইনী চিকিৎসক ছুটিতে থাকার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ওই দুই রোগীর সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের উদ্যোগ নেন। পরে সিজারের মাধ্যমে দুই নারীর ছেলে সন্তান প্রসাব করানো হয়।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি জানান, দুইজন অন্তঃসত্ত্বা মা প্রসব যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিলেন। তাদের জরুরি সিজার প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু গাইনী চিকিৎসক ছুটিতে থাকার কারণে তা সম্ভব হচ্ছিলো। সিভিল সার্জন স্যার বিষয়টি অবগত হয়ে ওই দুই রোগীর সিজার করেন। অপারেশন কার্যক্রমে তিনি (ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি) সার্বিক সহায়তা করেন। সিজারের পর জন্ম নেওয়া দুটি ছেলে নবজাতক ও দুই মা সুস্থ আছেন।
রোগীর স্বজনরা জানান, চৌগাছা হাসপাতালে রোগীর সিজার না হলে রোগী নিয়ে তাদের অন্যত্র ছুটতে হতো। এতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি দুর্ভোগের শিকার হতেন। সিভিল সার্জনের আন্তরিকতায় সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সিজারিয়ান অপারেশনের সুযোগ পেয়ে তারা আনন্দিত। সিভিল সার্জন অত্যান্ত ভালো মনের মানুষ বলে আখ্যায়িত করেন ওই দুই রোগীর স্বজনেরা।
সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, অসহায় মুহূর্তে একজন রোগীর সেবায় এগিয়ে যাওয়া প্রত্যেক চিকিৎসকের দায়িত্ব। তিনিও এই দায়িত্বের বাইরে নন। সরকারি হাসপাতালে অধিকাংশ গরিব রোগী ভর্তি হন। কারণ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণের সামথ্য অনেকের নেই। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে মানুষের আস্থা ফেরাতে তিনি নিজেই ওই দুই রোগীর সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করেন। সিভিল সার্জন আরও জানান, সংকটময় মুহুর্তে সকল চিকিৎসককে একযোগে কাজ করতে হবে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
The post চৌগাছা হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসক ছুটিতে, সিজার করলেন সিভিল সার্জন appeared first on গোবি খবর.