বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২

‘মার্কেট খুলতে না পারলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা অচলাবস্থা ছিল রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায়। বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক ওই এলাকা। শুরু হয়েছে যানচলাচল। ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় দোকান খোলার। ঈদের আগে এই সময়ে মার্কেট না খুললে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

২৪ ঘণ্টার ভীতিকর পরিস্থিতির অবসানের পর বুধবার (২০ এপ্রিল) ভোর থেকেই নিউমার্কেট এলাকার সড়কগুলো স্বাভাবিক হয়। সবগুলো সড়কে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হলেও তার আগে থেকে সড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সড়কে শিক্ষার্থীরা না থাকলেও নিউমার্কেটের দোকানপাট খোলার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। প্রতিটি মার্কেটের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিনের বেশি সময় ধরে মার্কেট বন্ধ। ঈদের সময় মার্কেট বন্ধ থাকলে অনেক বেশি ক্ষতি হয়।

সকাল ৯টায় দোকান খোলার জন্য এসেছেন চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের মৌসুম চলছে। এই সময় মার্কেট না খুলতে পারলে বড় লস হয়ে যাবে। আজ দোকান খোলার জন্য এসেছিলাম, কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্তের পর দোকান খুলবো।

নিউমার্কেটে যান চলাচল স্বাভাবিক, দোকান খোলার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা

হকার্স মার্কেটের দোকানি হাবিলদার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কখন দোকান খুলুম আর কখন বেচাকেনা করুম তা আল্লাহই জানে।’

এদিকে সকালে ঢাকা কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের মূল গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী গেটের আশপাশে নেই।

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ. ম. কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীরা সবসময়ই দোকান খুলতে চান। তবে তারা কখন খুলবেন সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গতকালের মতো আর যেন সংঘর্ষ না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুপক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

নিউমার্কেটে যান চলাচল স্বাভাবিক, দোকান খোলার অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা

এরপর মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধের পর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড়-সায়েন্সল্যাব এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরও ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটসহ আশপাশ এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা যায়।

দুদিনের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১১ জন সাংবাদিক, ঢাকা কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এবং ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

এদিকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ১০টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সাত কলেজ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট।

টিটি/ইএ/জেআইএম



Advertiser