মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২

বন্যায় ধান উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না: কৃষিমন্ত্রী

মাঠে এই মুহূর্তে তেমন কোনো ফসল না থাকায় বন্যায় ধান জাতীয় ফসল উৎপাদনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (২১ জুন) মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তবে ধানে প্রভাব না পড়লেও বন্যায় শাক-সবজি উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চেরাপুঞ্জিতে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়াতে তিন-চার দিনে প্রায় ২ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটা ১২২ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ এলাকায় অস্বাভাবিক পানি ঢুকে। এই মুহূর্তে কোনো ফসল তেমন মাঠে ছিল না।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলে প্রচুর জমি পতিত থাকতো। মানুষ চাষাবাদে তেমন একটা আগ্রহী ছিল না। আমরা সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছি এই জমিগুলোতে চাষাবাদ করার এবং এতে আউশ ধান করা যায় কি না, সে উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমরা দেখছি বন্যায় সিলেটের ২২ হাজার হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জ হবিগঞ্জ মিলে প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে।’

‘আজ আমরা খবর পাচ্ছি কুড়িগ্রাম, নীলফামারী এই এলাকায় যে পানি আসছে তাতে ৫৬ হাজার একর জমির ক্ষতি হয়েছে। মানে আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। যদিও আউশ উঁচু জমিতে হয়। বন্যা যদি আর না বাড়ে, এখন যে অবস্থায় আছে তাতে আর ক্ষতি হবে না।’

বন্যায় শাক-সবজি উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজার হেক্টরে। এ সময় গ্রীষ্মকালীন সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে। তিল ও বাদাম চর এলাকায় ছিল সেটারও ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আউশ ও শাক-সবজির।’

বন্যায় ধান উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না: কৃষিমন্ত্রী

‘এ সময় আমরা রোপা আমনের বীজতলা করি। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় ফসল। প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমরা আমন করি। এটা থেকেই আমাদের এক কোটি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন ধান হয়। এটা কিন্তু বন্যার উপর নির্ভর করে। এখনও বীজতলা সেভাবে করেনি। কেবল শুরু করেছে। আর যদি বৃষ্টি না হয় আর বন্যা যদি না বাড়ে তাহলে ভালো। তবে অনেক সময় দেখা যায় আবার বন্যা আসে, এতে বীজতলা নষ্ট হয়। তখন আমরা আবার করি, পুনর্বাসন কর্মসূচিতে যাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলতে পারছি না কত ক্ষতি হচ্ছে বা ক্ষতি হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন আমনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি রাখতে। বীজতলা যদি নষ্ট হয় তাহলে আমরা যে এক্সট্রা কিছু বীজ রাখি ঘরে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য, আবার বীজতলা তৈরি করে মানুষকে দেওয়া। সে প্রস্ততি আমরা নিয়েছি। আরেকটি হলো একেবারেই যদি ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাহলে লেট ভ্যারাইটি…।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমন হলো ফটোসেনসিটিভ। দিন ছোট হলেই এতে ফুল চলে আসে। যে ধানগুলো সাধারণত আমনে করা হয় সেটা করলে ফুল আসবে আর উৎপাদন কম হবে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা জাত উদ্ভাবন করেছেন যেগুলো লেস ফটোসেনসিটিভ। এগুলো বিবেচনায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যে পরিস্থিতিই আসুক, যদি আমন নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে রবি ফসল আমাদের বাড়াতে হবে। শাক-সবজি, আলু, তেলের বীজ ও সার আমরা বিনামূল্যে চাষীদের দেবো। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

 

আরএমএম/জেএইচ/জিকেএস



Advertiser