প্রায় এক মাস ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। এর মধ্যে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিটিতেই মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এতে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদাম অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) মাসের ব্যবধানে সাড়ে ৩ শতাংশের ওপরে কমে গেছে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি নির্ণয় করা হয় মূল্য আয় অনুপাত দিয়ে। সাধারণত ১০-১৫ পিইকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত ধরা হয়। আর কোনো কোম্পানির পিই ১০ এর নিচে নেমে গেলে, ওই কোম্পানির শেয়ারদাম অবমূল্যায়িত বা বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ ধরা হয়।
ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত অনেক আগেই ১৫ এর নিচে নেমেছে। গত ১৬ জুন লেনদেন শেষে ডিএসইর পিই দাঁড়ায় ১৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ের দরপতনে তা আরও কমে এখন ১৩ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে পিই দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমেছে।
এদিকে, চারটি খাতের পিই এখনো সার্বিক বাজার পিই’র নিচে রয়েছে। এই চার খাতের মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক, ওষুধ, বিবিধ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। আগের মতো সবচেয়ে কম পিই রয়েছে ব্যাংক খাতের। বর্তমানে এই খাতের পিই রয়েছে ৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট, যা এক মাস আগে ছিলো ৭ দশমিক ৮০ পয়েন্টে।
১১ দশমিক ৩০ পিই নিয়ে এর পরের স্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এক মাস আগে এ খাতের পিই ছিল ১১ দশমিক ৬০। পরের স্থানে থাকা বিবিধ খাতের পিইও ১১ দশমিক ৩০ পয়েন্ট, এক মাস আগে যা ছিলো ১২ দশমিক ১০ পয়েন্ট। সার্বিক বাজারের তুলনায় কম পিই থাকা আরেক খাত ওষুধের পিই ১৩ দশমিক ১০ পয়েন্ট, যা এক মাস আগে ছিলো ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট।
অপরদিকে, সবচেয়ে বেশি পিই রয়েছে জীবন বিমা খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ২০ পয়েন্টে, এক মাস আগে যা ছিল ৬৭ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। সর্বোচ্চ পিই’র তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চামড়া খাত। এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৭০ পয়েন্ট, যা এক মাস আগে ছিল ৫২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। ৩০ দশমিক ১০ পয়েন্ট নিয়ে এ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিরামিক খাত। এক মাস আগে এ খাতের পিই ছিল ৩৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট।
এছাড়া বাকি খাতগুলোর মধ্যে সাধারণ বিমা খাতের পিই এক মাসের ব্যবধানে ১৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট থেকে কমে ১৪ দশমিক ১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রকৌশল খাতের পিই ১৯ দশমিক ৯০ পয়েন্ট থেকে কমে ১৯ দশমিক ৫০ পয়েন্ট হয়েছে।
অন্যদিকে, আইটি খাতের পিই ২৬ দশমিক ৩০ পয়েন্টে থেকে ২৪ দশমিক ৭০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সেবা ও আবাসন খাতের পিই ১৭ দশমিক ৮০ পয়েন্ট থেকে ১৫ দশমিক ৮০ পয়েন্ট হয়েছে। অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং খাতের পিই ২১ পয়েন্ট থেকে ১৯ দশমিক ৯০ পয়েন্টে নেমেছে।
এছাড়াও সিমেন্ট খাতের পিই ২৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট থেকে ২৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট হয়েছে। আর খাদ্য খাতের পিই ২৪ দশমিক ৬০ পয়েন্ট থেকে ২৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট হয়েছে।
এমএএস/এমপি/এএসএম