অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চার ট্রাস্টির জামিন আবেদনের ওপর জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানি কার্যতালিকা (কজলিস্ট) থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই চার সাবেক ট্রাস্টি হলেন- রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। অন্যদিকে, আসামিদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি এমএ কাশেম ও রেহেনা রহমানের জামিন আবেদনের ওপর জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানি হয় গত ১৭ আগস্ট। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির জন্য ২৮ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এটি শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে, আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি এম এ কাশেম ও রেহেনা রহমানের জামিন শুনানি পেছানোর বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ওইদিন সাংবাদিকদের জানান, তাদের জামিন শুনানির সময় জঙ্গিবাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয় ও চারজন ট্রাস্টির জামিন শুনানি একসঙ্গে শুনানির বিষয় উল্লেখ করে রাষ্ট্র ও দুদক সময়ের আবেদন করে। এরপর আদালত এ সময় দেন। ২৮ আগস্ট চারজন ট্রাস্টির জামিন একসঙ্গে শুনানি হবে।
এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ মুঞ্জুরুল হক।
অন্যদিকে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দুই ট্রাস্টি রেহানা রহমান ও এম এ কাশেমের জামিন বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। গত ২ আগস্ট একই আদালতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে তাদের দুজনকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশ দেন আদালত।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে মামলা করে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
ছয় আসামির মধ্যে চারজন আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। গত ২২ মে চার আসামিকে জামিন না দিয়ে শাহবাগ থানায় পাঠান উচ্চ আদালত।
আদালতে ওইদিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও মিজান সাঈদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
হাইকোর্টের ওই আদেশের পর চারজনকে আদালতে নিয়োজিত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন হাইকোর্ট। পরদিন ২৩ মে অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ট্রাস্টিকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত। কারাগারে পাঠানো চার আসামি হলেন- রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ।
এফএইচ/ইএ/এএসএম