মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আজিজুর মোল্লা (২৬)। শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুর থেকে ফোন করে নিহতের খবর জানান আজিজুরের সহকর্মীরা।
নিহত আজিজুর উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের বাতাগ্রামে মো. কালাম মোল্লার ছেলে। এদিকে দ্রুত আজিজুরের মরদেহ দেশে আনতে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবার। অন্যদিকে আজিজুরের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে সালথা উপজেলা প্রশাসন।
নিহতের চাচাতো ভাই মো. ইউসুফ মোল্লা জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জানানো হয়, কাজ শেষে সাইকেলযোগে বাজারে যাওয়ার সময় পেছন থেকে একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাকে ধাক্কা দিলে আজিজুর ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এরপর সেই খবর আজিজুরের পরিবারকে জানানো হয়।
আজিজুরের সেজো ভাই মো. ইয়াসিন মোল্লা জানান, পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে আজিজুর চতুর্থ, একমাত্র বোন সবার ছোট। সে দরিদ্র বাবার পরিবারের স্বচ্ছলতা আনতে মালয়েশিয়া যান।
তিনি জানান, আজিজুরের ওপর ভর করেই কৃষক বাবার দরিদ্র পরিবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল। দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার বিমর্ষ। বড় ভাইয়েরা সবাই বিয়ে করে যে যার মতো সংসার গড়েছেন। আর আজিজুর তার বয়স্ক মা-বাবার ভরণ পোষণ দিতেন।
আজিজুরের মৃত্যুর খবর জানার পর থেকেই বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন বৃদ্ধ মা কমেলা বেগম। কোনো শান্ত্বনা যেন তার মনকে মানাতে পারছেন না। যাকে তাকে ধরে আজিজুরকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন বারবার।
আজিজুরের বাবা মো. কালাম মোল্লা সন্তানের মরদেহটি ফিরিয়ে আনতে চান। দরিদ্র পরিবার জানে না কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত পাওয়া যাবে লাশ, তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
নিহতের চাচা আকুব্বর মোল্লাও জানান, যেভাবেই হোক আজিজুরের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে অনুরোধ করেন তিনি।
মাঝারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আফসার উদ্দিন মাতুব্বর জানান, মরদেহ ফিরিয়ে আনতে কাগজপত্র সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন শাহীন বলেন, মারা যাওয়ার খবর সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জেনেছি। মরদেহ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের (উপজেলা প্রশাসনের) যতটুকু সহযোগিতা করার প্রয়োজন তা করা হবে।
এন কে বি নয়ন/এমআরএম/জেআইএম