মোস্তফা কামাল সুমন: স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিক্রান্ত হলেও স্বাধীন বাংলাদেশে মন্ত্রীর দেখা পেলো না গাইবান্ধার জেলার বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন ৩২, গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ। ক্ষণকালস্থায়ী গণপরিষদের স্পিকার শাহ আব্দুল হামিদ ছাড়া আর কেউই মন্ত্রীর স্বাদ পেলো না। সিরাজুল ইসলাম বুদু মিয়া প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন ডিস্ট্রিক ডেভলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর (ডিডিসি) হলেও সচিবালয়ে বসার সৌভাগ্য হয়নি কারো। এটা গোবিন্দগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্যদের অযোগ্যতা না মন্ত্রীত্ব প্রদানকারীদের উদাসীনতা এই প্রশ্ন উপজেলাবাসীর মনে বারে বারে ঘুরতে থাকে।
অল্পকাল পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। কে কোন দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছে আর কে এমপি হলে মন্ত্রী হতে পারবে এই নিয়ে জোর আলোচনা চলছে গোবিন্দগঞ্জে। একজন পূর্ণ মন্ত্রীর অভাবে অনেকটাই উন্নয়ন বঞ্চিত গোবিন্দগঞ্জ। মন্ত্রীত্ব প্রশাসনিক পদ হলেও দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে এটা উন্নয়নের পদ। স্বাধীনতার পর এগোরটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একবার উপ নির্বাচন সহ গোবিন্দগঞ্জে এমপি নির্বাচন হয়েছে মোট ১২ বার। আর ১২বারে ৯জন ব্যক্তিকে গোবিন্দগঞ্জবাসী তাদের নেতা সংসদ সদস্য হিসেবে পেয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র সিরাজুল ইসলাম বুদু মিয়া প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় তৎকালীন রংপুর জেলার ডিডিসি হলেও কেউই মন্ত্রী হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়নি। এই নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ বাসাীর মনে অনেক দুঃখ আছে।
রাজনীতির উর্বর ভূমি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ। স্বাধীনতা সংগ্রাম সহ দেশের যেকোন আন্দোলন সংগ্রামে এই উপজেলা অগ্রগণ্য। তবু কেন এমন একটি উপজেলা থেকে দেশখ্যাত নেতার জন্ম হচ্ছে না? কেন ৩২, গাইবান্ধা- ৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনের কোন সংসদ সদস্য মন্ত্রীত্ব পাচ্ছে না। সত্যিই কি গোবিন্দগঞ্জের সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীত্ব পাওয়ার অযোগ্য নাকি দলীয় প্রধানরা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসীর সাথে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে। এরকম শত শত প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসীর মনে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘণিয়ে আসছে এই প্রশ্ন তাদের আরো বিচলিত করে তুলছে।
গোবিন্দগঞ্জের রাজনীতি কি সঠিক পথে আছে? নাকি শুধু হইয়ে চলছে! এ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কি শুধু আঞ্চলিক অন্তমূখী? নাকি তারা সারাদেশে গ্রহণ যোগ্য অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। মন্ত্রীর পরিচয়ে একটা জনপদ পরিচিত হয়। যেমন, আমরা অধিকাংশ কাজীপুরকে চিনি শুধুমাত্র সাবেক বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কল্যাণে। আমার বিশ্বাস গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খুব কম লোক আজ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুরে গিয়েছে। তবু আমরা কাজীপুরকে চিনি শুধু ওই মন্ত্রী ও তার পিতাঁর কল্যাণে। এরকম গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসীও পরিচিতি হোক কোন মন্ত্রীর নামে এই প্রত্যাশা রাখছি।
তারিখে প্রকাশিত এবং ঈষৎ সংশোধিত ও পরিমার্জিত
The post স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২ বছরেও মন্ত্রী দেখলো না গোবিন্দগঞ্জ appeared first on গোবি খবর.