রবিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২

বিরল রোগে আক্রান্ত ৬ ভাই-বোনের বিশ্বরেকর্ড

তিন ভাই তিন বোন একই রোগে আক্রান্ত। স্বাভাবিক আর দশজন মানুষের চেয়ে তাদের শরীর চামড়ার রং একেবারেই ভিন্ন। একটু বেশিই সাদা। সেই সঙ্গে চুল, চোখের পাপড়ি, ভ্রু সবই সাদা। জন্মগতভাবেই তারা এই জিনগত রোগে আক্রান্ত। পাকিস্তানের একটি মুসলিম পরিবারে জন্ম এই ৬ ভাই-বোনের।

নাসিম আখতার, গোলাম আলী, হায়দার আলী, মুকাদাস বিবি, মুসারত বেগম এবং সবচেয়ে ছোট মোহাম্মদ রফি। তবে এজন্য তারা নাম লিখিয়েছেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। ২০২১ সালের মে মাসে অ্যালবিনো রোগে আক্রান্ত এই ভাইবোনকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

অ্যালবিনিজম এক ধরনের জেনেটিক অবস্থা। যা শরীরে মেলানিন উৎপাদন করে। মেলানিন শরীরের একটি রাসায়নিক যা ত্বক, চুল এবং চোখের রঙ নির্ধারণ করে। রাসায়নিকটি অপটিক্যাল নার্ভের বিকাশের সঙ্গেও জড়িত। এর ঘাটতি হলে শরীরের রং পরিপূর্ণভাবে বিকাশ পায় না।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত দম্পতি আসলাম পারভেজ এবং শামীম আখতারের ছয় সন্তান তারা। তারা দুজনই এই রোগে আক্রান্ত জন্ম থেকেই। মূলত বাবা-মা দুজনের এই সমস্যা থাকলে তা সন্তানদের মধ্যেই দেখা যায়।

jagonews24

ছোট থেকে তারা তাদের শরীরের রঙের জন্য নানান ঝামেলার মুখোমুখি হয়েছেন। স্কুলে পড়তে গিয়ে শৈশবেই হয়েছেন বৈষম্যের শিকার। অন্যান্য ছেলেমেয়েরা এই সাদা রঙের জন্য ভয়ে কাছে আসত না। তা তাদের বন্ধুর সংখ্যাও ছিল খুবই কম। তবে যতই বড় হয়েছেন, নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন এসবের সঙ্গে।

ছোট ভাই রাফি বলেন, তাদের ছয় ভাইবোন সবারই দৃষ্টিশক্তি দুর্বল ছিল। যে কারণে সবসময় তারা একে অপরকে সাহায্য করেছেন। তারা বিশ্বাস করতেন, যেহেতু তাদের দৃষ্টিশক্তি ততটা ভালো নয়, তাই সবাই একসঙ্গে থাকলে কেউ তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

ভাইবোনরা সবসময় তাদের বড় বোন নাসিম আখতারের প্রতিনিধিত্ব করা নিরাপদ আশ্রয়ের উপর নির্ভর করেছেন। নাসিম আখতার কাজ করেন NHS পুনর্বাসন কর্মকর্তা হিসেবে।

নাসিমা বলেন, তিনি সবার বড় এবং তিনি আগেই সব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাই তার ভাইবোনরা যেন তার মতো বাধার সম্মুখীন হতে না হয় এজন্য সব সময় তাদের পরামর্শ দিয়েছেন, আগলে রেখেছেন।

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডের এই স্বীকৃতি তাদের জীবনকে অনেক সহজ করবে। এমনকি তাদের মতো সমাজে আরও যারা আছেন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। একই সঙ্গে অন্যদেরও দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সহায়তা করবে বলে মনে করেন তিনি।

সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস

কেএসকে/এএসএম



Advertiser