মো.হারুন আল রশীদ,ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটের একটি ঐতিহ্যবাহী পলাশবাড়ী চিমনীয়া দাখিল মাদ্রাসায় বয়স ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও এর কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। মাদ্রাসায় প্রায় ৩শত জন শিক্ষার্থী থাকলেও আধুনিক অবকাঠামো ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী আর আশ্বাস নয় এ প্রতিষ্ঠানে বাস্তব উন্নয়ন চায়।
১৯৬২ সালে এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পলাশবাড়ী চিমনীয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ মাদ্রাসায় বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ চালু রয়েছে। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৩শত জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রতিষ্ঠানে ১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। সকল শিক্ষক কর্মচারী এমপিওভুক্ত। পড়াশোনার দিক দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। শত প্রতিকূলতার পরও এ প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক। গত ২০১৯ সালে এ মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় ২৯ জনের মধ্যে ২৮ জন,২০২০ সালে ৩১ জনের মধ্যে ৩১ জন এবং ২০২১ সালে ৩৩ জনের মধ্যে ৩৩ জনই পাস করেছে। অপরদিকে ২০১৯ সালে দাখিল পরীক্ষায় এ মাদ্রাসা থেকে ২৩ জন অংশ গ্রহণ করে ২৩ জন,২০২০ সালে ২৮ জনের মধ্যে ২৫ জন এবং ২০২১ সালে ২২ জনের মধ্যে ১৪ জন পাস করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত। আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব,শিক্ষকদের অফিস কক্ষ,মানসম্মত ক্লাসরুম,বিজ্ঞানাগার,গ্রন্থাগার,খেলার মাঠ,শহীদ মিনার কিছুই নেই। তাছাড়া স্বাস্থ্য সম্মত ওয়াশরুমসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা অপ্রতুল।
এলাকাবাসীর সহায়তায় একটি দ্বিতল ভবন থাকলেও পিলারে ফাটল ধরার কারণে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। মানসম্মত অবকাঠানো না থাকায় অনেক সচেতন অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে অনিহা প্রকাশ করে। মাদ্রাসাটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোন সরকারি অনুদানে ভবন নির্মিত হয়নি। মাদ্রাসার উত্তর পার্শে টিনশেডের ভবন থাকলেও টিনগুলো জরাজীর্ণ হওয়ায় বর্ষাকালে পানি ক্লাসে পড়ে। এতে শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় বইখাতা ও পোষাক পানি নষ্ট হয়ে যায়। ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র আবু ইউসুফ বলেন,খেলার মাঠ,শহীদ মিনার নেই। তাছাড়া ক্লাসরুমের উপর টিনের ছাউনি। জরার্জীণ টিনগুলো ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টি আসলে আমাাদের বইখাতা ও পোষাক পানিতে ভিজে যায়। ওই মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো.আব্দুল হামিদ বলেন,প্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থী ও পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার সন্তোষজনক। তারপরও প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুদানের কোন ভবন নেই। এলাকাবাসীর সহায়তায় কোনরকমে এর অবকাঠামো নির্মাণ করে পাঠদান প্রক্রিয়া চলছে। তবে আধুনিক সুযোগ সুবিধা ছাড়া মানসম্মত শিক্ষাদান করা বড়ই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সরকারের কাছে জোর দাবী জানান অচিরে এ প্রতিষ্ঠানে যেন একটি আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ভবন নির্মাণ করা হয়।
এব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবু সাঈদ বলেন,প্রত্যেক বছর প্রতিটি উপজেলায় নির্দিষ্ট সংখ্যক মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলে ওই মাদ্রাসাতে নতুন ভবন নির্মাণ করা সম্ভব। আগামীতে যেন ওই মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মিত হয় সে ব্যাপারে আমার সুদৃষ্টি থাকবে।
The post ৬০ বছরও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি যে মাদ্রাসায় appeared first on গোবি খবর.