বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

যশোরে মুক্তিযোদ্ধা রুপচাঁদ হত্যা  মামলার তদন্তে ধীরগতি

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি: যশোরের শার্শার বসতপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রূপচাঁদ সরদার ও এলাহী বক্স হত্যা মামলার তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই। দীর্ঘ এক যুগ পার হলেও কোন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি তদন্তকারী সংস্থা। এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে বর্তমানে বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজনের পিতা বুজতলা গ্রামের মিজানুর রহমান মাস্টারসহ চারজন জীবীত আছেন। মামলার বাদি বসতপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ এ তথ্য জানিয়েছেন।বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, আদালতের আদেশে অভিযোগটি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছিল। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলকায় যেয়ে বেশ কয়েকবার খোঁজখবর নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন হয়। ট্রাইব্যুনালের আদেশে মামলার নথি পুলিশ প্রশাসন ট্রইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়। একবার এ মামলায় সাক্ষী দেয়ার জন্য যশোর সার্কিট হাউজে উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছিল। ঢাকায় থাকার কারনে তিনি সাক্ষী দিতে আসতে পারেনি। পরবর্তীতে তিনি মামলার তদন্তের ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালে খোঁজ নিয়ে তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে কিছু জানতে পারেনি। দীর্ঘ একযুগ পার হওয়ায় অনেক আসামি মৃত্যুবরণ করেছে। আজ অবধী এ মামলার কোন তদন্ত হয়েছে কিনা তিনি জানেনা
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা পাকিস্তানি রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিল। তারা এলাকার নারী-পুরুষদের ধরে নিয়ে বাগআঁচাড় রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যা করত। ১৯৭১ সালের ১৭ অক্টোবর রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, রূপচাঁদ সরদার ও এলাহী বক্সসহ অন্যরা স্থানীয় কাউন্সিল অফিসে বসে বাগআঁচড়া রাজাকার ক্যাম্পে হামলার ব্যাপারে বৈঠক করছিলেন। রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা এ সংবাদ পেয়ে কাউন্সিল অফিসে হামলা চালিয়ে রূপচাঁদ সরদার ও এলাহী বক্সকে ধরে ফেলে। এরপর তারা ওই দুইজনকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। গুলিতে এলাহী বক্স ঘটনাস্থলে শহীদ হন এবং রূপচাঁদ সরদার গুরুতর আতহ হন। রূপচাঁদ সরদারকে ক্যাম্পে নিয়ে সারারাত নির্যাতনের পর স্থানীয় শ্মশানঘাটে নিয়ে গর্ত খুঁড়ে জীবীত অবস্থায় মাটিতে কবর দেয়া হয়।
স্বাধীনতার ৩৮ বছর পর রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসায় এ মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার বিচরের দাবিতে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট যশোর আদালতে মামলা করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ। মামলায় আসামি করা হয়েছিল বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজনের পিতা মিজনুর রহমান মাস্টারসহ ১৩ জনকে। আদালতের আদেশে ৬ আগস্ট শার্শা থানায় অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই ওমর শরীফ। এ মামলার আসামিরা ওই সময় হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছিলেন।
২০১০ সালে যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন হয়। ট্রাইব্যুনালের আদেশে মামলার নথি ২০১২ সালের ১৭ জুন যশোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মাধ্যমে ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়। এ মামলায় বাদীকে একবার যশোর সার্কিট হাউজে উপস্থিত হয়ে সাক্ষী দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তিন ঢাকায় থাকায় সাক্ষী দিতে আসতে পারেনন্। বর্তমানে এ মামলাটি কি অবস্থায় আছে মামলার বাদী তা জানেনা বলে জানিয়েছেন।

The post যশোরে মুক্তিযোদ্ধা রুপচাঁদ হত্যা  মামলার তদন্তে ধীরগতি appeared first on গোবি খবর.



Advertiser