সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২

দু’বছরের ক্ষতি এবার পোষাবেন ব্যবসায়ীরা

বৈশ্বিক মহামারি করোনার থাবায় গেলো দু’বছর রমজানে ব্যবসা করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। করোনা সংক্রমণ রোধে কার্যত বন্ধ ছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। বিশেষ করে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পোশাক ব্যবসায়ীরা যে লাভের আশা করেন তা ভেস্তে যায় গত দু’বছর। তবে এবার করোনা সংক্রমণ কমে আশায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোমর বেঁধে নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। ছুটছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে।

রোববার (১০ এপ্রিল) রংপুর নগরীর ছালেক মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, গোলাম মোস্তফা সুপার মার্কেট, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, হাড়িপট্টি রোড, তালতলা রোডসহ বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানে কেনাকাটার আগাম প্রস্তুতি চলছে।

অনেকেই রোজার আগে ও শুরুতেই বিভিন্ন মোকাম থেকে মালামাল কিনে দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। বাহারি রঙের কাপড় শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। আবার কেউ কেউ নতুন কাপড় কিনতে অবস্থান করছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে।

jagonews24

ছালেক মার্কেটের ‘সিনথিয়া গার্মেন্টস’র মালিক সনি আহমেদ জানান, করোনার কারণে ২০২০ সালের রমজান মাসে পুরোপুরি দোকান বন্ধ ছিল। ২০২১ সালে রমজানের শেষ দিকে কিছুদিন দোকান খোলা থাকলেও আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি। তবে এবার করোনা সংক্রমণ কমে আসায় গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা চলছে।

রোজা শুরুর আগেই তিনি দোকানে নতুন পোশাক তুলেছেন এবং আরও মোকাম থেকে পোশাক আনার কথা ভাবছেন বলেও জানান এ ব্যবসায়ী।

হাড়িপট্টি রোডের ‘জননী বস্ত্রালয়’র মালিক এনামুল হক জানান, রোজার শুরুর দিকে বেডশিট, পর্দার কাপড়, তোয়ালেসহ প্রয়োজনীয় কিছু মালামাল কিনেছেন। দু’একদিনের মধ্যে লুঙ্গি কিনতে তিনি পাবনা ও কুষ্টিয়ার মোকামে যাবেন। এবার ব্যবসা ভালো হবে বলে তিনি আশা করছেন।

jagonews24

জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্সের ‘তাঁত ঘর’র মালিক ফারুক হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। প্রয়োজনে আরও শাড়ি কেনার জন্য তিনি প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

হাড়িপট্টি রোডে ফরহাদ ক্লথ স্টোরে গিয়ে দেখা যায়, ওই দোকানের মালিক ফরহাদ হোসেন পাইকারি বাজার থেকে লুঙ্গি কিনতে শনিবার দুপুরে পাবনার শাহজাদপুরে গেছেন।

ফরহাদের বড় ভাই ফারুক হোসেন জানান, করোনার আগে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তার দোকানে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার লুঙ্গি বিক্রি হতো। করোনার ধকল কাটিয়ে এবার আরও বেশি বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তাই সবদিক থেকেই প্রস্তুতি চলছে।

রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন জাগো নিউজকে বলেন, দেশে এখন বড় ধরনের কোনো মহামারি নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। সবদিক বিবেচনায় বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা ভালোই হবে বলে আশা করি।

jagonews24

এদিকে পুরোপুরি কেনাকাটা জমে না উঠলেও দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই ঘুরে ঘুরে বাজার যাচাই করছেন। পছন্দ হলে কিনেও ফেলছেন।

কারমাইকেল কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসকিয়া হক বলেন, রোজা শুরুর পরপরই তিনি পছন্দের একটা থ্রিপিস কিনেছেন। ২০ রোজার পর আবার মার্কেট ঘুরে একটি বা দুটি থ্রিপিস কেনার ইচ্ছা আছে তার।

পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান মেহেদী জানান, গত দু’বছর ঈদে কিছু কেনেননি। এবার পাঞ্জাবি ও জিন্স প্যান্ট কিনবেন। এ জন্য সুযোগ পেলেই বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখছেন।

এফএ/জিকেএস



Advertiser