বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২

বিভাগে প্রথম হলেন সড়কে প্রাণ হারানো রাবির সোহাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের এমবিএ প্রথম সেমিস্টারের প্রকাশিত ফলাফলে ৩.৯০ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন সড়কে প্রাণ হারানো সোহাগ মিয়া। গত বছরের ডিসেম্বরে পরীক্ষা শেষে গ্রামের বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় সোহাগের জীবনপ্রদীপ।

সোহাগ মিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের এমবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন। বিবিএর ফলাফলেও বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি।

সোহাগের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার বেপারীবাড়ি গ্রামে। বাবা হাবিবুর রহমান ও মা নিলুফা বেগমের প্রথম সন্তান ছিলেন তিনি।

বুধবার (২৫ মে) ফলাফল প্রকাশের পর উচ্ছ্বাসের বদলে সহপাঠী স্মরণে অনেকটা ম্রিয়মাণ পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিভাগে।

বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এমবিএর প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষে গ্রামের বাড়ী নরসিংদী যাচ্ছিলেন সোহাগ। ভোর রাতে সোহাগকে বহনকারী বাসটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে এসে উল্টে যায়। এতে আহত সোহাগকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় সোহাগসহ আরও তিনজন নিহত হন। আহত হন ১০ জন।

ফল প্রকাশের পর স্মৃতিচারণ করে বুধবার সোহাগের সহপাঠী বেলাল হোসেন বিপ্লব বলেন, তার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই আমাদের হৃদয়কে কাঁপুনি দেয়। ব্যক্তিগতভাবে সোহাগ অত্যন্ত বিনয়ী ছিল। আমাদের সব বন্ধু ও ছোট ভাই-বোনদের কাছে খুব প্রিয় মুখ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আজ এমবিএর রেজাল্ট দিলো। সোহাগ মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন সেটি দেখে ওর কথা আরও বেশি মনে পড়ছে। সোহাগের বাবা-মায়ের কাছে ওর এত ভালো ফলাফলের কথা জানানোর সাহস পাচ্ছি না। আল্লাহ ওকে ভালো রাখুন।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো মায়েন উদ্দিন বলেন, রেজাল্ট প্রকাশ হওয়ার পর আমাদের কষ্টটা বেড়েই গেলো। দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিল সোহাগ। ভালো ফলাফলে সে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি দেশের জন্য অবদান রাখতে পারতো। কিন্তু একটা মানবসৃষ্ট কারণে আমরা তাকে হারালাম। এটা আমাদের দেশের জন্য, জাতির জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য কষ্টদায়ক। বিভাগের শিক্ষার্থী কিংবা সিআর (শ্রেণি প্রতিনিধি) হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী ছিল। আমরা তার জন্য দোয়া করি।

মনির হোসেন মাহিন/এমআরআর/এএসএম



Advertiser