রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মিরহাজিরবাগ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাওন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে মাদারীপুর ও রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকরী মিজানুর রহমান ওরফে মিজান বেপারী (৩২) ও তার সহযোগী জুয়েল ওরফে ফুটবল জুয়েল।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আরও পড়ুন: সুইচ গিয়ার বের করে শাওনের বুকে সরাসরি আঘাত করেন নাবিল
র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার শাওন ও অভিযুক্ত মিজান যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় দুটি গ্রুপ চালাতেন। এলাকায় দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতার মিজানুর রহমান।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত আড়াইটার দিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শাওনকে হত্যা করা হয়। আলোচিত ওই ঘটনায় শাওনের ভাই বাদী হয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান ও জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, শাওন দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি টিকাটুলীর একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন। গত বছরের (২০২২ সালের) মাঝামাঝি সময়ে মীরহাজিরবাগ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাওনের সঙ্গে রজব নামের এক ব্যক্তির বাকবিতণ্ডা হয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত মাসে শাওন এবং রজবের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই মিজানকে জানান। পরে মিজান শাওনকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং সুযোগ খুঁজতে থাকেন। ঘটনার দিন রাতে শাওন তার স্ত্রীর জন্য ওষুধ কিনতে বাসা থেকে বের হন। এসময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মিজান মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবস্থান করছিলেন। রজব অতর্কিতভাবে শাওনকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেন। এ সময় জুয়েল রাস্তার মোড়ে পাহারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যেন হঠাৎ করে কোনো পথচারী ঘটনাস্থলের দিকে না আসে। গুরুতর জখম হয়ে শাওন জীবন বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মিজান যাত্রাবাড়ী এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে যাত্রাবাড়ী ও মীরহাজিরবাগ এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর তিনি শ্যামপুর এলাকায় তার আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। পরে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার হন। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আরএসএম/কেএসআর/এএসএম