শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

সাতদিনের নবজাতককে অপহরণ, লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকি

কেবল পৃথিবীর আলো দেখেছে শিশুটি। এখনো তার নাম রাখেনি পরিবার। মাত্র সাতদিন বয়সী শিশুটিকে অপহরণ করে এক দম্পতি। সাতদিন বয়সী শিশুটি অপহরণের পর সাতদিন জিম্মি করে রাখে তারা। মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করা হয় ভুক্তভোগী মায়ের কাছে। টাকা না পেলে সাতদিনের শিশুটিকে হত্যার হুমকিও দেন তারা।

এঘটনায় কোনো উপায় না দেখে র‌্যাবের শরণাপন্ন হন শিশুটির মা। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যশোরের অভয়নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী রুবেল ও তার স্ত্রী তানিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। উদ্ধার করা হয়েছে অপহরণের শিকার নবজাতককেও।

শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ঢাকা জেলার ধামরাই থানার ঢুলিভিটা এলাকার বাসিন্দা মিলি আক্তার। তিনি গৃহপরিচারিকা হিসেবে অন্যের বাসায় কাজ করেন। গর্ভাবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। এরই মধ্যে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মিলি। তার অসুস্থতার সময়ে গত দেড়-দুই মাস ধরে পরিচিত রুবেল ও তানিয়া আফরোজা নামের এক দম্পতি নিয়মিত খোঁজ-খবর ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়ায়।

‘এভাবে তাদের সঙ্গে মিলির ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রুবেল ও তার স্ত্রী তানিয়ার কাছে নবজাতক সন্তানকে রেখে ওষুধ আনতে বাইরে যান। এই সুযোগে নবজাক শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান রুবেল ও তানিয়া।’

সাতদিনের নবজাতককে অপহরণ, লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকি

আরও পড়ুন: ৫ বছরের শিশু অপহরণে ২৪ বছর পর খালুর যাবজ্জীবন

এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। না পেলে নদীতে ফেলে হত্যার হুমকি দেন। পরবর্তী সময়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগী মিলি আক্তার।

ভুক্তভোগী মিলি আক্তার তার নবজাতক শিশুকে ফিরে পেতে র‌্যাব-৪ এর সহায়তা চেয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ মার্চ রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল যশোর জেলার অভয়নগর থানার আমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী মো. রুবেল শেখ (৩৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া আফরোজকে (২৩) গ্রেফতার করে। সাতদিনের নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধারও করা হয়।

ভুক্তভোগী মিলি আক্তার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকার বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।

আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে অপহরণচেষ্টা, না পেরে কানের দুল ছিনতাই

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব বিষয় জানিয়ে বলেন, গ্রেফতার রুবেলের বিরুদ্ধে যশোরের অভয়নগর থানায় ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা রয়েছে। তিনি গার্মেন্টসের পাশাপাশি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। রুবেল এর আগে একাধিক বিয়ে করেন। গ্রেফতার তানিয়া আফরোজকে তিন বছর আগে বিয়ে করেন। তানিয়াকে বিয়ে করে ধামরাই ঢুলিভিটা এলাকায় বসবাস করতেন।

টিটি/এমএইচআর/জেআইএম



Advertiser