প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিক্ষোভে নেমেছেন লাখো ইসরায়েলি নাগরিক। শনিবার (৪ মার্চ) নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে তেল আবিব ও অন্যান্য স্থানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তবে পরে ইসরায়েলি পুলিশের প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছেন ও অবরোধের পর সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। সেসময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন>> নাগরিকদের জন্য অস্ত্র আইন সহজ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী
শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইতিহাসের শিক্ষক রনেন কোহেন (৫৩) বলেন, ‘নেতানিয়াহু সরকারের আইন সংস্কারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে এসেছি। এ সংস্কারটি ইসরায়েলি সরকার আমাদের ওপর জোর চাপিয়ে দিয়েছে। আশা করি, বিশাল এ বিক্ষোভ কার্যকর হবে।
ওফির কুবিটস্কি (৬৮) নামের আরেক শিক্ষক বলেন, ইসরায়েল একটি স্বৈরাচার দেশে পরিণত হতে চলেছে। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ চালিয়েই যাবো।
আরও পড়ুন>> ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত
সম্প্রতি ইসরায়েলের নতুন সরকার দেশটির বিচার ব্যবস্থা সংশোধন ও সুপ্রিম কোর্টকে ‘দুর্বল’ করার একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেছে। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করা হলে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো খুব সহজেই বাতিল করতে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট। অর্থাৎ, বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের সদস্যরা।
তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এ পরিকল্পনা বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলবে ও দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি এ সংস্কারের ফলে সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট হবে ও আদালত ব্যবস্থা তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। এমনকি, নতুন এ সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ব্যবস্থাকেও নষ্ট করে ফেলবে।
আরও পড়ুন>> ইরান যে কোনো উপায়ে ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করবে: খামেনি
সমালোচকরা আর দাবি করছেন, এ পরিকল্পনা শুধু যে বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করবে তা নয়। নাগরিক স্বাধীনতাকেও বিপন্ন করবে ও পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়বে। অন্যদিকে, বিতর্কিত এ আইনের সমর্থকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টকে রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখাটা আসলেই জরুরি। এ সংস্কার দ্রুত কার্যকর হোক।
রয়টার্স বলছে, নেতানিয়াহু সরকার নতুন সংস্কারের জন্য প্রথমেই সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। মূলত তারপর থেকেই চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক সরকারের এ পরিকল্পনা বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছেন।
আরও পড়ুন>> অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হলো ইসরায়েলি কূটনীতিককে
তবে বুধবার (১ মার্চ) থেকে বিক্ষোভের আরও বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। সেদিন ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। সেসময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ